জন্মঃ তিনি আনুমানিক ৭০৯ হিজরী বা ৭১২ হিজরী এর মধ্যবর্তী সময় তাহার জন্ম। যেই দিন তিনি জন্ম গ্রহণ করেন সেই দিন ইব্রাহীম মঞ্জুব দুইবার অন্দর মহলে আসেন এবং বলেন ছেলেকে অত্যন্ত সাবধানে লালন পালন করিও সেবক আমানত যা আল্লাহ তায়ালা তােমাদেরকে দান করিয়াছেন। সুলতান হুজুর নবী করীম (দঃ) এর আদেশক্রমে আগত জনের নাম আশরাফ রাখলেন। কেননা অত্যন্ত আবেদন বিনয় নিবেদনের বিনিময়ে শুভ সংবাদে তাহার জন্ম হয়েছিল। সেই জন্যেই তাহার ছােটকাল থেকেই আল্লাহর নিদর্শন প্রকাশ পাইতে থাকে।
*বিদ্যা অর্জনঃ যখন তাহার চার বৎসর চার মাস চার দিন হলাে তখনই তাহাকে বিসমিল্লাহ শরীফ
*বাদশাহীঃ সবেমাত্র হযরত গাউসুল আলম শরীয়তের পূর্ণ শিক্ষা শেষ করেছেন। বয়স তখন ১৫ বৎসর তখনই তাহার আব্বাজান ইন্তেকাল করেন। আর এদিকে রাজ্যের দ্বায়িত্বভার তাহাকেই সামলাতে হবে ৭২৪ হিজরী বা ৭২৭ হিজরী মধ্যবর্তী সময় তিনি সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন এবং অত্যন্ত সুক্ষ্মতীক্ষ্ম ন্যায় বিচারের মধ্য দিয়ে আব্বাজানের সেই সুপরিচালিত রাজ্যকে তিনি অত্যন্ত দৃঢ় মনােবল নিয়ে পরিচালনা শুরু করে ছিলেন ।
* ন্যায় বিচারঃ তাহার ন্যায় বিচারে ঘটনা অনেক রয়েছে তার মধ্যে “লাতায়েফে আশরাফী” কিতাবে হযরত আলাউদ দৌলা সিমনানী হইতে দুটি ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে।
হযরত গাউসুল আলম সৈয়দ আশরাফ জাহাঙ্গীর সিমনানী (আলাইহির রাহমাহ) একবার শিকার করার উদ্দেশ্য কোন এক জায়গায় গেলেন শিকারী খুজাখুজি করার জন্য সৈনিকদের চর্তুদিকে পাঠিয়ে দিলেন। এমন সময় এক বৃদ্ধ আবেদন নিয়ে আসল যে, এক সিপাহী তার দই জোর করে খেয়ে ফেলেছে। তখন তিনি সকল সিপাহীকে হাত বেধে দাড়িয়ে যেতে আদেশ করলেন। বললেন চিহ্নিত কর কোন সিপাহী তােমার দই খেয়েছে উপস্থিত যারা ছিল তারা কেউ নই এমতাবস্থা আরেকজন সিপাহী শিকার নিয়ে আসছিল লােকটি বলল হযরত ঐ সিপাহী আমার দই খেয়েছে সাথে সাথে সিপাহী অস্বিকার করল। লােকটি কোন সাক্ষী উপস্থিত করতে পারেনি। তখন হযরত নিজ দ্বায়িত্ব সাক্ষীর ব্যবস্থা বের করল এইভাবে বললেন দোষী সিপাহী কে ৪টি মাছি খাওয়ায়ে দাও মাছি খাওয়ার সাথে সাথেই সিপাহী বমি করল তখন পর্যন্ত দই হজম হয়নি তাই বমিতে দই বের হয়ে আসল। সাথে সাথে দোষী সাব্যস্ত হলাে তাই সিপাহীর ঘােড়া জিনসহ লােকটিকে দিয়ে সিপাহীকে কারাগারে প্রেরন করে দিল। দ্বিতীয় ঘটনা হলাে তাহার দরবারে এক দরবেশ অভিযােগ তুলে ধরল যে আমি একদল লােকের সাথে ঘুমিয়ে ছিলাম আমার কোমরে বেল্টবদ্ধ ৪০টি আশরাফী মুদ্রা ছিল সেগুলি গভীরে কোমর থেকে কে বা কাহারা নিয়ে গেছে কিন্তু যারা সাথে ছিল হযরত সকলকে জিজ্ঞাসা করলেন সবাই কসম (শপথ) করে অস্বীকার করল অতঃপর দরবেশ লােকটি হাউমাও করে কাঁদতে লাগল অতঃপর হযরত কাফেলার মধ্যে সকল প্রকারের লােকই উপস্থিত ছিল হযরত সকলের বুকে হাত রাখতে শুরু করলেন দেখা গেল শেষের ব্যক্তির বুকে হাত রাখার সাথে সাথে তার বুকটা ধরফর করিতেছে অতঃপর হযরত তার থেকে মুদ্রা বের করলেন। একটি মুদ্রা কম ছিল যা সে নিজেই স্বীকার করেছিল যে এক মুদ্রা সে খরচ করে ফেলেছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন