হযরত মাহবুবে ইয়াযদানী শেখ সৈয়দ আশরাফ জাহাঙ্গীর সিমনানী (র.) এর পর তার উত্তরাধিকারের ধ্বজা হযরত আবদুর রাজ্জাক নুরুল আইন (র.) এর উপর বর্তায়। কেননা হযরত মাহবুবে ইয়াযদানী চিরকুমার ছিলেন বিধায় সন্তান সন্তুতির প্রশ্ন অবান্তর। তাই তাঁর রূহানী সন্তান হযরত আবদুর রাজ্জাক (র.) ই তাঁর ওফাতের পর তরিকতের দায়িত্বে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন এবং অবদুর রাজ্জাক নুরুল আইন (র.) এর বংশধরগণ আশরাফ জাহাঙ্গীর সিমনানী (র.) এর দিকে নিজেদের পরিচয়কে বিশেষিত করেন। ফলে তাঁরা ‘আশরাফি খান্দান
হিসাবে পরিচিত হন। হযরত নুরুল আইন’ (র.) হযরত গাউছুল আজম দস্তগীর মাহবুবে সুবহানী পীরানে পীর, মুহিউদ্দিন আবদুল কাদের জিলানী (র.) এর বংশধর ছিলেন। তিনি গিলানেই স্বীয় পিতা-মাতার সাথে বসবাস করতেন, তাঁর মাতা হযরত মাহবুবে ইয়াজদানীর (র.) খালাতাে বােন। হযরত যখন গিলানে গিয়ে ছিলেন তখন কিশাের আবদুর রাজ্জাক তাঁর প্রতি অতিশয় আকৃষ্ট হন এবং চিরদিনের জন্য মাতা-পিতার অনুমতি নিয়ে হযরতের সঙ্গ অবলম্বন করেন। হযরতও তাঁকে স্বীয় রূহানী সন্তানরূপে গ্রহণ করে নিয়েছিলেন। এ সম্পর্কে ইতােপূর্বেও উল্লেখিত হয়েছে। গাউছুল আলম হযরত মাহবুবে ইয়াদানীর ইন্তেকালের পর প্রায় চল্লিশ বছর হযরত নুরুল আইন’ স্বীয় স্কন্ধে অর্পিত দায়িত্ব পালন করেন। তার পর তাঁরই সুযােগ্য পুত্রগণের উপর এ দায়িত্ব অর্পিত হয়। হযরত নুরুল আইনের (র.) পাঁচ পুত্র সন্তান ছিলেন। পাঁচ জনই অতি বুযর্গ ও নেক্কার ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তাঁরা হলেন হযরত শামসুদ্দিন, হযরত সৈয়দ হাসান, সৈয়দ হােসাইন, সৈয়দ আহমদ এবং সৈয়দ শাহ ফরিদ (র.)। হযরত মাহবুবে ইয়াদদানী (র.) ইন্তেকালের সময় এ পাঁচজনকেই অশেষ স্নেহভরা দোয়া ও অমূল্য তাবারুক দান করেছিলেন। তন্মধ্যে হযরত সৈয়দ শামসুদ্দিন (র.) আঠার বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন এবং অপর চার জন আশরাফিয়া বংশীয় ও তরিকতের ধারাকে সম্প্রসারিত করেন এবং জীবিত রাখেন। এদের চার জনের মধ্যে হযরত সৈয়দ ফরিদ (র.) এর বংশীয় ধারা তাঁর পরে কয়েক পুরুষ পর বিলুপ্ত হয়ে যায়। বর্তমানে হযরত সৈয়দ শাহ হাসান (র.) ও হযরত সৈয়দ শাহ হােসাইন (র.) এর বংশধরগণ বাসখারী ও কিছাউছা সহ রুহআবাদ রাসুলপুরে এবং হযরত শাহ আহমদ (র.) এর বংশগণ জায়েস শরীফে (রায় বেরেলী) বিদ্যমান রয়েছেন। নবী দুলালী খাতুনে জান্নাত হযরত ফাতেমা (রা.) এর নয়নের দুই মনি হযরত হাসান (রা.) ও হােসাইন (রা.) এর বংশীয় ধারার মিলন মােহনা হযরত গাউছুল আজম পীরানে পীর (র.) এর শােনিতের গৌরবজনক উত্তরাধিকার এবং শহীদে কারবালা হযরত ইমাম হােসাইন (রা.) এর বংশীয় ধারার হযরত মাহবুবে ইয়াযদানী (র.) এর রূহানী ও জিসমানী একাত্মতার ফলে আশরাফিয়া খান্দান এক বিরল সম্ৰান্ততা ও আভিজাত্যের অধিকারী ফলে সৈয়দ বংশীয় এ ধারাটি এমন বিরল স্বাতন্ত্র বৈশিষ্ট্য নিয়ে বংশগত ভাবে যেমন শরীফ হিসাবে খ্যাতিমান তেমনি তাদের দ্বীনি খেদমত, উন্নত চারিত্রিক মাধুর্য ও ইলমে দ্বীনের পাণ্ডিত্যের জন্যও তারা এশিয়া ইউরােপসহ পৃথিবীর সর্বস্থানে সুপরিচিত। গাউছুল আজম হযরত শাহ সৈয়দ আবদুল কাদের জিলানী (র.) এর পূর্ব পুরুষগণের ইলমী ও আমলী উঁচু রােবা সম্পর্কে সকলে কিছু না কিছু অবহিত যা দ্বারা গাউছে পাকের বংশিয় পরম্পরার মর্যাদা সকলের নিকট সু-প্রতিষ্ঠিত, এমনিভাবে গাউছুল আলম হযরত মাহবুবে ইয়াযদানী (র.) এর বংশীয় পূর্ব পুরুষগণের অনন্য মর্যাদাও সবিশেষ উল্লেখযােগ্য। জানা যায় যে, তার পূর্ব পুরুষগণ পুরুষানুক্রমে একাধারে সুলতান, দরবেশ, হাফেজ, আলেম এবং কারী হিসাবে অতিক্রান্ত হয়েছেন। তাই ‘খানদানে আশরাফিয়ার উত্তর পুরুষগণের মধ্যে স্বভাবে, গুনে, জ্ঞানে-কর্মে উল্লেখিত দুই মহাপুরুষের পূরুষানুক্রমিক গুনাবলী ও বৈশিষ্ট্যর বিশেষ ছাপ ও প্রভাব সুস্পষ্ট। তাই হযরত আবদুর রাজ্জাক নুরুল আইন (র.) এর উত্তর পুরুষগণ শরীয়ত এবং তরিকত উভয় ক্ষেত্রেই খেদমত আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন। যে স্থানত্রয়ে আলােকিত করে আজ পাপী তাপীর শােধনাগার রূপে দাঁড়িয়ে আছে। চক্ষুষ্মন আলেমগণের অভিমতানুযায়ী কিয়ামত পর্যন্ত ইনশাল্লাহ এগুলাে প্রতিষ্টিত থাকবে। তাই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত হতে ছুটে আসে অসংখ্য আল্লাহর বান্দা। এখানে এসে অশান্ত বিক্ষুব্ধ আত্মার অর্জিত হয় শান্তি। গভীর আত্মবিশ্বাসে ভরে যায় অন্তর।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
Featured post
Hazrat Noorul Aen Ki Shadi, Aulad Aur Sajjadanashin Janashine Makhdoom Ashraf
Jab Syed Ashraf Jahangir Simnani (R.A) Syed Abdur Razzaq Noorul Ain (R.A) ki Zahir o Batini Tarbiyat farma chuke aur unhain uloom o funoon...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন