হযরত জোবায়ের (রাঃ) ও হযরত সাআদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রাঃ) এই দুইজন নিজেদেরকে
খেলাফতের দাবী হইতে দূরে রাখিলেন। তখন আর চারিজন মাত্র বাকী রহিলেন। হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রাঃ) উদ্যোগী হইয়া হযরত আলী (রাঃ) এবং হযরত ওসমান (রাঃ) কে প্রস্তাব করিলেনঃ আমি আল্লাহর ও আল্লাহর রাসূল এবং সমগ্র মুসলমানের দিকে চাহিয়া আপনাদের কোন একজনকে খলীফা নির্বাচন করিব। এই কথা বলিয়া প্রথমেই তিনি হযরত আলী (রাঃ) এর হস্তধারণ করতঃ বলিলেন, হে আলী (রাঃ)! আপনার উপর আল্লাহ প্রদত্ত অঙ্গীকার যিম্মাদারী ও হযরত রাসূলে করীম (صلى الله عليه وسلم)-এর যিম্মাদারীর রক্ষণাবেক্ষণ করা অবশ্য কর্তব্য। আমরা আপনার হাতে বায়াত করবার পর আপনাকে আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের সন্তুষ্টি বিধান এবং মুসলমানদের মঙ্গল ও কল্যাণ কামনায় আত্মনিয়ােগ করিতে হইবে। আর আপনাকে হযরত রাসূলে করীম (صلى الله عليه وسلم) হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) এবং হযরত ওমর ফারুক (রাঃ)-এর চরিত্র ও গুণাবলী অবলম্বন করিতে হইবে। হযরত আলী শেরে খোদা (রাঃ) নিজের ভিতরে এই সামর্থ্য অনুভব করিলেন না। অতএব তিনি হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রাঃ)-এর প্রস্তাবে সাড়া প্রদান করিতে বিরত থাকিলেন। অতঃপর হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রাঃ) হযরত ওসমান জুন্নুরাইন (রাঃ)-এর হাত ধারণ করিয়া অনুরূপ প্রস্তাব দান করিলেন। তিনি উহা স্বীকার করিয়া নিলেন এবং হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রাঃ) সঙ্গে সঙ্গে তাহার হাতে বায়াত করিলেন। পরদিন সর্বসাধারণের বায়াত অনুষ্ঠিত হইল। এইভাবে হযরত ওসমান (রাঃ) সাহাবাদিগের সম্মিলিত সিদ্ধান্তে খলীফা নির্বাচিত হইয়া শাহাদত বরণের দিন পর্যন্ত নিখুঁত হকের উপর এই পদে বহাল ছিলেন। সারা জীবনে তাঁহার যবান হইতে এমন একটি উক্তি বা বাক্য নির্গত হয় নাই, যাহাকে তাহার শাহাদাতের কারণ হিসাবে পেশ করা যায়। তবে রাফেজী (শিয়া) সম্প্রদায় এক্ষেত্রে ভিন্ন মত পােষণকারী। আল্লাহ তাহাদেরকে হেদায়াত দান করুক। আমিন।
[সংকলঃ হুজুর গাউসে আজম হযরত শায়খ আব্দুল কাদির জিলানী রহঃ এর লেখা বিখ্যাত কিতাব গুনিয়াতুত তালেবিন।]
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন